শ্রীমদ্ভাগবতে ৭/৬/১ উল্লেখ অাছে,
কৌমার অাচরেৎ প্রাজ্ঞো ধর্মান্ ভাগবতানিহ। দুর্লভং মানুষং জন্ন তদপাধ্রুবমর্থদম্।।
“প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি মানবজন্ন লাভ করে এই জাগতিক অনিত্য সুখের প্রয়াস না করে কুমার বয়সেই ভাগবত-ধর্মের অনুষ্ঠান করবে।কারণ,সংসারে মানবজন্ন—অতি দুর্লভ,তা অাবার ক্ষণিক। কিন্তু ক্ষণস্হায়ী হলেও ভগবদ্ভক্তি সাধনায় এই জীবন পরম অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে।”
কৌমার অাচরেৎ প্রাজ্ঞো ধর্মান্ ভাগবতানিহ। দুর্লভং মানুষং জন্ন তদপাধ্রুবমর্থদম্।।
“প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি মানবজন্ন লাভ করে এই জাগতিক অনিত্য সুখের প্রয়াস না করে কুমার বয়সেই ভাগবত-ধর্মের অনুষ্ঠান করবে।কারণ,সংসারে মানবজন্ন—অতি দুর্লভ,তা অাবার ক্ষণিক। কিন্তু ক্ষণস্হায়ী হলেও ভগবদ্ভক্তি সাধনায় এই জীবন পরম অর্থপূর্ণ হয়ে ওঠে।”
এর পরবতী শ্লোকগুলিতে বর্ণনা করা হয়েছে যে,মানুষ তার দুর্লভ জীবনটা কিভাবে নষ্ট করছে।মুগ্ধ বা অজ্ঞান অবস্থায় শৈশবের দশটি বছর কেটে যায়,কৌমার অবস্থায় দশটি বছর খেলাধূলায় কেটে যায়।জড় বিদ্যায় কৈশোর অতিবাহিত হয়।তারপর দুঃখজনক কাম ও মোহে সংসার-সুখ ভোগে অাসক্ত থেকে কর্তব্য- সন্ধান শূন্য অবস্থায় অারও দশ বছর পেরিয়ে যায়।সন্তান ও স্ত্রীর প্রতি অাসক্ত চিত্তা করতে পারে না।তারপর তারা নিছক ইন্দ্রিয় তৃপ্তির উদ্দেশ্যে প্রিয়তম প্রাণকে বিপন্ন করেও টাকাপয়সা উপার্জনের জন্য যত্ন করে।
যৌবন ও প্রৌঢ় অবস্থায় এই ভাব অায়ুক্ষয় হয়।এই সব সংসার-ভোগাসক্ত ব্যক্তিরা সমস্ত দেশে সমস্ত কালে অাধিঅাত্নিক,অাধিভৌতিক,অাধিদৈবিক— সমস্ত দুঃখের মধ্যে ক্লিষ্ট হতে থাকে। নানা দুঃখে জর্জরিত হয়ে চিত্ত বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়।তখন নানা রকমের পাপকাজে তারা অগ্রসর হয়। তখন তারা জেনে শুনেও পাপকর্মে লিপ্ত হয়।হিতাহিত জ্ঞানশূন্য অবস্থায় তারা গতানুগতিক পদ্ধতিতে জীবন ক্ষয় করতে থাকে।”এটা অামার ওটা অামার”এরূপ ভাব পোষণ করে পণ্ডিত ব্যক্তিও অতি অাসক্ত হয়ে কুটুম্ব-পরিবার পালন করতে করতে অান্তবিষয়ক শুভ পরামর্শ নিতে সমর্থ হয় না।
কিন্তু অতি মূর্খের মতো অজ্ঞান তাই লাভ করে এবং কোনও দেশে কোনও কালে জ্ঞানহীন ভগবৎ-বিমুখ ব্যক্তি নিজেকে ভবচত্রু থেকে মুক্ত করতে পারেনা।অর্থাৎ জন্ন—জন্নান্তর ধরে নানা দুঃখপূর্ণ জড় জীবন গ্রহণ করতে থাকে।”শ্রীমদ্ভাগবতে পরবতী শ্লোকে বলা হয়েছে,”কামলম্পট ব্যক্তিরা স্ত্রীদের খেলার হরিণের মতো হয়ে পড়ে।মূর্খতা বশত পুত্রপৌত্র ইত্যাদির প্রতি অাসক্তিও তারা ছাড়তে পারে না।”
শ্রীমদ্ভাগবত ৭/৬/১৭ শ্লোকে সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানেও বোঝা যায়,মানুষ তার জীবনের মোট অায়ুর অর্ধাংশ ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়।দিন হিসাবে কারও বয়স যদি সত্তর বছর হয়।
শ্রীমদ্ভাগবত ৭/৬/১৭ শ্লোকে সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানেও বোঝা যায়,মানুষ তার জীবনের মোট অায়ুর অর্ধাংশ ঘুমিয়েই কাটিয়ে দেয়।দিন হিসাবে কারও বয়স যদি সত্তর বছর হয়।
তবে পঁয়ত্রিশ বছর প্রায় ঘুমিয়েই সে কাটিয়েছে বলা যায় এবং বাদবাকী তথাকথিত জাগ্রত অবস্থায় সে নানা প্রজল্প,নানা রাজনীতি, কুটনীতি, অনর্থক শয়তানী চিন্তায় কাটিয়ে দেয়।মৃত্যুর দরজায় উপনীত হওয়াকে বার্ধক্য বলে।সেই হিসেবে,একটি শিশুও বৃদ্ধ। কেননা যে কোন মুহূর্তেই অামাদের মৃত্যু হতে পারে।অামরা সবাই মৃত্যুর দরজায় দাঁড়িয়ে অাছি।ভবিষ্যৎতের বিশ্বাস নেই। অামারও অকালমৃ্ত্যু হতে পারে।বার্ধক্য সবার ভাগ্যে জোটে না।অনেক মনে করেন,এখন যা ইচ্ছা তাই করা যাক।
পরে যখন চুল পাকবে,সব কিছু সমস্যা-জটিল হয়ে পড়বে,মেজাজ খিটখিটে হবে,দাঁত পড়ে যাবে,চোখে ছানি পড়বে,কান কালা হবে,হাত পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হবে,যখন বিছানায় মলমূত্র ত্যাগ করব এবং কফ পিত্ত বায়ুতে এই দেহপিণ্ডটা ভর্তি হবে,সকলের অবজ্ঞা ও বিড়ম্বনার কারণ হয়ে দাঁড়াব,তখন খুব করে নেচে গেয়ে ভগবানের নামকীর্তন-সাধন ভজন করব।”সেই সব কামপাগলা ব্যক্তি অাত্নঘাতী অাত্নপ্রবঞ্চক ছাড়া অার কিছু নয়। হরিভজন একমাত্র মানবজীবনের জন্যই এবং তাই ছোটবেলা থেকেই বৈদিক পন্তায় জীবন গঠন করতে হয়।তারপর ব্রহ্মাচারী কিংবা গৃহস্থ কিংবা সন্ন্যাসী যা-ই-হন না কেন,সর্বদা কৃষ্ণভক্তির অনুকূলে থাকাই মূল কথা।
0 মন্তব্যসমূহ
Thanks for Comment
Emoji