"স্বামী বিবেকানন্দ"

"স্বামী বিবেকানন্দ"-এর অন্য ব্যবহারের জন্য, দেখুন স্বামী বিবেকানন্দ (দ্ব্যর্থতা নিরসন)
স্বামী বিবেকানন্দ
Swami Vivekananda-1893-09-signed.jpg
শিকাগোয় স্বামী বিবেকানন্দ, সেপ্টেম্বর, ১৮৯৩। বাঁদিকে বিবেকানন্দ ইংরেজিতে লিখেছেন: "one infinite pure and holy – beyond thought beyond qualities I bow down to thee" অর্থাৎ "প্রণাম করি সেই একক, অনন্ত, শুদ্ধ ও পবিত্র –চিন্তা ও গুণের অগম্য (ঈশ্বরকে)।")[১]
জন্ম নরেন্দ্রনাথ দত্ত
১২ জানুয়ারি ১৮৬৩
কলকাতা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(অধুনা কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতীয় প্রজাতন্ত্র)
মৃত্যু ৪ জুলাই ১৯০২ (৩৯ বছর)
বেলুড় মঠ, হাওড়া, হাওড়া জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(অধুনা বেলুড় মঠ, হাওড়া, হাওড়া জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতীয় প্রজাতন্ত্র)
জাতীয়তা ভারতীয়
প্রতিষ্ঠাতা রামকৃষ্ণ মিশন
রামকৃষ্ণ মঠ
গুরু রামকৃষ্ণ
দর্শন অদ্বৈত বেদান্ত, রাজযোগ
সাহিত্য কর্ম রাজযোগ, কর্মযোগ, ভক্তিযোগ, জ্ঞানযোগ, মদীয় আচার্যদেব, ভারতে বিবেকানন্দ
বিশিষ্ট শিষ্য(সমূহ) অশোকানন্দ, বিরজানন্দ, পরমানন্দ, আলাসিঙ্গা পেরুমল, অভয়ানন্দ, ভগিনী নিবেদিতা, সদানন্দ
উদ্ধৃতি ওঠো, জাগো, লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না
(অন্যান্য উদ্ধৃতি দেখুন)
স্বাক্ষর 200px
স্বামী বিবেকানন্দ (বাংলা: [ʃami bibekanɒnɖo] ( শুনুন), Shāmi Bibekānondo; ১২ জানুয়ারি, ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দ  – ৪ জুলাই, ১৯০২ খ্রিস্টাব্দ) জরাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত (বাংলা: [nɔrend̪ro nat̪ʰ d̪ɔt̪t̪o]), ছিলেন একজন হিন্দু সন্ন্যাসী, দার্শনিক, লেখক, সংগীতজ্ঞ এবং ঊনিংশ শতাব্দীর ভারতীয় অতীন্দ্রি়য়বাদী রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রইউরোপে হিন্দুধর্ম তথা ভারতীয় বেদান্তযোগ দর্শনের প্রচারে প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন।[২] অনেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধে বিভিন্ন ধর্মমতের মধ্যে পারস্পরিক সুসম্পর্ক স্থাপন এবং হিন্দুধর্মকে বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্ম হিসেবে প্রচার করার কৃতিত্ব বিবেকানন্দকে দিয়ে থাকেন।[৩] ভারতে হিন্দু পুনর্জাগরণের তিনি ছিলেন অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ ভারতে তিনি ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ধারণাটি প্রবর্তন করেন।[৪] বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠরামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন।[২] তার সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তৃতাটি হল, "আমেরিকার ভাই ও বোনেরা ...,"[৫] ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় প্রদত্ত চিকাগো বক্তৃতা,[৫] যার মাধ্যমেই তিনি পাশ্চাত্য সমাজে প্রথম হিন্দুধর্ম প্রচার করেন।
স্বামী বিবেকানন্দ কলকাতার এক উচ্চবিত্ত হিন্দু বাঙালি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি তিনি আকর্ষিত হতেন। তার গুরু রামকৃষ্ণ দেবের কাছ থেকে তিনি শেখেন, সকল জীবই ঈশ্বরের প্রতিভূ; তাই মানুষের সেবা করলেই ঈশ্বরের সেবা করা হয়। রামকৃষ্ণের মৃত্যুর পর বিবেকানন্দ ভারতীয় উপমহাদেশ ভালোভাবে ঘুরে দেখেন এবং ব্রিটিশ ভারতের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করেন। পরে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের বিশ্ব ধর্ম মহাসভায় ভারত ও হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ডইউরোপে তিনি হিন্দু দর্শনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অসংখ্য সাধারণ ও ঘরোয়া বক্তৃতা দিয়েছিলেন এবং ক্লাস নিয়েছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিকাগো বক্তৃতা, কর্মযোগ, রাজযোগ, জ্ঞানযোগ, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বেদান্ত, ভারতে বিবেকানন্দ, ভাববার কথা, পরিব্রাজক, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, বর্তমান ভারত, বীরবাণী (কবিতা-সংকলন), মদীয় আচার্যদেব ইত্যাদি। বিবেকানন্দ ছিলেন সংগীতজ্ঞ ও গায়ক। তাঁর রচিত দুটি বিখ্যাত গান হল "খণ্ডন-ভব-বন্ধন" (শ্রীরামকৃষ্ণ আরাত্রিক ভজন) ও "নাহি সূর্য নাহি জ্যোতি"। এছাড়া "নাচুক তাহাতে শ্যামা", "৪ জুলাইয়ের প্রতি", "সন্ন্যাসীর গীতি" ও "সখার প্রতি" তার রচিত কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা। "সখার প্রতি" কবিতার অন্তিম দুইটি চরণ– “বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর? / জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর।" – বিবেকানন্দের সর্বাধিক উদ্ধৃত একটি উক্তি।
ভারতে বিবেকানন্দকে ‘বীর সন্ন্যাসী’ নামে অভিহিত করা হয় এবং তার জন্মদিনটি ভারতে জাতীয় যুব দিবস হিসেবে পালিত হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ