শাস্ত্রমতে কল্কি অবতার ও কলি যুগের বর্ণনা



শাস্ত্রমতে কল্কি অবতার ও কলি যুগের বর্ণনা
কলিযুগের ব্যাপ্তিকাল ৪লক্ষ ৩২হাজার বছর । খ্রীস্টপূর্ব ৩১০১ এ কলিযুগের আরম্ভ হয় । বর্তমানে এযুগের ৫১১৩ বছর চলছে । এই জুগ শেষ হতে আর ও প্রায় ৪,২৭০০০ বছর বাকী। দ্বাপরের অবসানে ব্রহ্মার পৃষ্ঠদেশ হতে অধর্মের সৃষ্টি হয়।
>কল্কি অবতার---কল্কি অবতার কলিযুগের অন্তে মানে শেষের দিকে আর্বিভাব ঘটবে । শম্ভল গ্রামে (মোরাদাবাদ জেলায় ) সুমতি নামে ব্রাহ্মণ কন্যার গর্ভে , বিষ্ণুযশা নামে ব্রাহ্মণের বাড়িতে , কল্কি নামে ভগবান বিষ্ণুর দশম অবতারের আর্বিভাব ঘটবে । কল্কি হবে বিষ্ণুযশা-সুমতির চতুর্থ সন্তান । বিষ্ণুযশা-সুমতির প্রথম তিন সন্তানের নাম হবে যথাক্রমে কবি, প্রাজ্ঞ আর সুমন্তক ।) 
▓ কলিযুগের বৈশিষ্ট্যসমূহ ▓ 
 কলিযুগের তিনপাদ অর্থাত্ চারভাগের তিন ভাগ অধর্ম ও একপাদ বা চারভাগের একভাগ মাত্র ধর্ম পালন করে । 
 কলিযুগের আয়ুষ্কাল ১০০বছর।
 মহারাজ পরীক্ষিতের সময় কলিযুগের শুরু হয়।
 ভাগবতে বলা আছে ছলনা মিথ্যা আলস্য নিদ্রা হিংসা দুঃখ শোক ভয় দীনতা প্রভৃতি হবে এযুগের বৈশিষ্ট। 
 বিষ্ণু পুরাণ মতে কম ধনের অধিকারী হয়ে মানুষ এ যুগে বেশী গর্ব করবে ।ধর্মের জন্য অর্থ খচর করবে না । 
 ধর্মগ্রন্থেরপ্রতি মানুষের আর্কষন থাকবে না । 
মাতাপিতাকে মানবে না । পুত্র পিতৃহত্যা বা পিতা পুত্র হত্যা করতে কুন্ঠিত হবে না । 
 কলিযুগের প্রধান গুন হচ্ছে মানুষ কম পরিশ্রমে বেশী পূণ্য অর্জন করবে । 
দান করাই হবে কলিযুগের শ্রেষ্ঠ ধর্ম। 
 চৈতন্য মহাপ্রভুর মতে হরিনাম সংকীর্তনই হবে কলিযুগের একমাত্র ধর্ম । 
 বিষ্ণু পুরাণ (৬/১/৮) এর মতে- 
• মানুষ বৈদিক ক্রিয়া আচার সমূহ করবে না । 
• ধর্মানুসারে কেউ বিবাহিত থাকবে না । 
• স্ত্রীলোকরা কেবল চুলের বাহদুরী করেই নিজেকে সুন্দরী বলে মনে করবে । 
• ধনহীন পতিকে স্ত্রীরা ত্যাগ করবে । আর ধনবান পুরুষরা সেই স্ত্রীগণের স্বামী হবে ।। 
• কলিযুগে ধর্মের জন্য ব্যয় না করে কেবল গৃহাদি নির্মাণে অর্থ ব্যয় করবে । 
• মানুষ পরকালের চিন্তা না করে কেবল অর্থ উর্পাজনের চিন্তাতেই নিরন্তর নিমগ্ন থাকবে । 
• কলিযুগে নারীরা সাধারনতঃ স্বেচ্ছাচারিণী ও বিলাস উপকরণে অতিশয় অনুরাগিণী হবে এবং পুরুষরা অন্যায়ভাবে অর্থ উপার্জন করতে অভিলাষী হবে । • সুহ্বদদের প্রার্থনাতে মানুষ নিজের অনুমাত্র স্বার্থ পরিত্যাগ করবেনা ।
• অসমর্থ মানুষরা ধনহীন হয়ে নিরন্তর দুর্ভিক্ষ ও ক্লেশ ভোগ করবে । 
• কলিকালে মানুষ স্নান না করে ভোজন করবে । 
• কলিকালে স্ত্রীলোকরা নিতান্তই লোভী হবে , বহু ভোজনশীল হবে । 
• স্ত্রীরা দুহাতে মাথা চুলকাতে চুলকাতে অনায়াসে পতি আজ্ঞা অবহেলা করবে । নিজের দেহ পোষণে ব্যস্ত থাকবে ,নিরন্তন কঠোর ও মিথ্যা বাক্য বলবে । • আচারহীন ব্রাহ্মণপুত্ররা ব্রহ্মচারীর বেশ ধারন বেদ অধ্যয়ন করবে । 
• গৃস্থরা হোমাদি করবেন না এবং উচিত দানসমূহও প্রদান করবেন । 
• মানুষ অশাস্ত্রীয়তপস্যা করবে । 
• কলি কালে ৮থেকে ১০বছরের বালকেরা সহবাসে ৫থেকে ৭বছর বয়সের বালিকারা সন্তান প্রসব করবে । 
• মানুষ সর্বোচ্চ ২০ বছর বাঁচবে । 
• কলিকালে মানুষের বুদ্ধি অতি অল্প ,তাঁদের ইন্দ্রিয় প্রবৃত্তি অতিশয় কুত্ সিত ,তাদের অন্তকরণ অতিশয় অপবিত্র হবে । আর অল্প কালেই বিনাশ লাভ করবে । 
• যখন পাষন্ড লোকের প্রভাব অত্যন্ত বাড়বে , তখন সমাজের ভালো লোক কোন দায়িত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থাকবে না । সজ্জনের হানি লক্ষিত হবে । 
• অল্প বৃষ্টি হবে, কলিকালে ফসল কম হবে । 
• কলিকালে মানুষ শ্বশুরের অনুগত হয়ে, কার মাতা কার পিতা এরকম কথা বলবে। 
• সুন্দরী স্ত্রী যার তার সাথে বন্ধুত্ব হবে , নিজ ভাইয়ের সাথে শত্রুভাব পোষন করবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ