প্রশ্নঃ আমি যদি শ্রীকৃষ্ণভজন না করি, সমাজের নিয়ম বা কর্তব্যগুলি পালন করে চলি। তবে কি আমার সদগতি হবে না?

প্রশ্নঃ আমি যদি শ্রীকৃষ্ণভজন না করি, সমাজের নিয়ম বা কর্তব্যগুলি পালন করে চলি। তবে কি আমার সদগতি হবে না?

উত্তরঃ শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে—
য এষাং পুরুষং সাক্ষাদাত্মপ্রভবমীশ্বরম্।
ন ভজন্ত্যবজানন্তি স্থানাদ্ ভ্রষ্টাঃ পতন্ত্যধঃ।।
(ভাঃ ১১/৫/৩)
অর্থাৎ, ‘সমাজ সংসারে মানুষ তার নিজ বর্ণ ও আশ্রমের মধ্যে যাবতীয় নিয়মকানুন বা কর্তব্যকর্ম সম্পাদন করে গেলেও, সাক্ষাৎ সকলের উৎস পরমেশ্বরকে ভজন না করে, তা হলে ভজন অবজ্ঞা হেতু স্বস্থান থেকে ভ্রষ্ট হয়ে সে অধপতিত বা নারকীয় অবস্থায় পতিত হয়।
শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতে শ্রীকৃষ্ণদাস গ্বোস্বামী বর্ণনা করেছেন—
চারি বর্ণাশ্রমী যদি কৃষ্ণ নাহি ভজে।
স্বকর্ম করিতেহ সে রৌরবে পড়ি’ মজে।।
(চৈঃচঃমধ্য ২২/২৬)
অর্থাৎ, ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র যদি তাদের নিজ নিজ কর্তব্য কর্ম পালন করে চলেও, কিংবা ব্রহ্মচারী, গৃহস্থ, বানপ্রস্থ ও সন্নাসী যদি তাঁদের নিজ নিজ ধর্ম সর্বতোভাবে পালন করেও, কৃষ্ণভজন না করে তা হলে তারা জড় জাগতিক অভিমান বশে উচ্চ মর্যদা লাভ করেও পরিনামে পুণ্যক্ষয়ে অবশ্যই নরকে নিমজ্জিত হয়।
শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষা এই, যে যেখানে থাকুক না কেন, যে কর্তব্য কর্ম সম্পাদন করুক না কেন, সমাজে যে শ্রেনীর লোক হোক না কেন তার অবশ্যই কৃষ্ণভজন করতে হবে। গৃহে থাকো, বনে থাকো সদা ‘হরি’ বলে ডাকো।
যাঁরা আপনার মতো ‘জীবনের সদগতি’ বাসনা করেন তাঁকে অবশ্যই সদ্-চিদ্-আনন্দময় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভজনা করতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ