প্রশ্নঃ আমিষভোজীরা বলে আমিষ না খেলে শরীর ভাল থাকে না। কথাটি কি ঠিক ?
উত্তরঃ শরীর ভাল না থাকার কারণ হচ্ছে মাছ-মাংস ভক্ষণ। বরং আমিষ ত্যাগ করলে নিরামিষ দ্বারা শরীর ও মন ভাল থাকে। অর্থাৎ আমিষের বিপরীত কথাটি ঠিক। পুষ্টিমূল্যের বিচারে দেখা গেছে নিরামিষ খাবারের পুষ্টিমূল্য আমিষ থেকে অনেক গুণ বেশি ( হায়ার টেসট, বিবিটি, ১৮ পৃঃ ) মাংসহারী দেশগুলিতে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে যে, শাকাহারীরা যতটুকু শাকসবজি গ্রহণ করে, মাংসাহারীরা তার পাঁচগুণ মূল্যের খাবার পশুদের আহার করিয়ে সেই একই পরিমাণ মাংস উৎপাদন করে ( দি ভেজিটেরিয়ান অলটারনেটিভ ১৯৭৮, পৃঃ ২৩৪.-লেস্টার ব্রাউন )।
চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলেন, খাদ্যরসের মধ্যে কোলেস্টেরল নামে এক প্রকার পদার্থ এসে উপস্থিত হলে সেই পদার্থের ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় শরীরে ক্ষয়রোগ মৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে।রক্তদূষণ, হৃদরোগ, অস্থিক্ষয়, ক্যানসার, খোস পাঁচড়া, চর্মরোগ ইত্যাদি ব্যাধির কারণ সেই ‘কোলেস্টেরল’ । এই পদার্থটির উৎস হল মাছ মাংস। তাই প্রিয় রোগীদের বর্তমানে কোলেস্টেরণ-বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ মাছ মাংস খেতে নিষেধ করেন। ১৯৬১ সাথে, ‘জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল এসোসিয়েসন’ ঘোষণা করে “ নব্বই থেকে সাতানব্বই শতাংশ হৃদরোগ নিরামিষ আহারের দ্বারা নিরাময় করা যেতে পারে।” ১৯৭৭ সালে ,ইন্টার সোসাইটি কমিশন ফর হার্ট ডিজিজ এর সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে, তামাক এবং মদের পরে মাংসই হল পশ্চিম ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং পথিবীর বহু ধনী দেশে অধিকাংশ অকাল মৃত্যুর কারণ।
অনেক সময় পত্রিকায় দেখা যায়, রুগ্ন মাছ খেয়ে বহু লোক মৃত্যু বরণ করছে। অবশ্য মৎস্য ব্যবসায়ীগণ ঐসব খবর আদৌ পছন্দ করেন না। দেখা যায়, মৎস্যভোজী বাঙালীর চেয়ে নিরামিষভোজী মাড়োয়ারীরা অনেক বেশি ভাল স্বাস্থ্যের অধিকারী।
শরীরত্ত্ববিদগণ মানুষের শরীরে অন্ত্র ও দাঁতের গঠন পরীক্ষা করে দেখেছেন,মানুষ আমিষভোজী শ্রেণীর জীব নয়। মানুষ নিরামিষ ভোজীর অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত মাংসাশী প্রাণীর দাঁতগুলি ছুঁচালো ও ধারালো এবং তাদরে থাকে শক্ত ও তীক্ষন নখ। যেমন বাঘ, সিংহ, কুকুর। সাধারণতঃ নিরামিষ ভোজীদরে দাঁত হয় চেপ্টা। যেমন গরু, ছাগল।
মাছ-মাংস রজ ও তমোগুনের সঞ্চারক অখাদ্য। তা মানুষের মনের উগ্রতা,বদ মেজাজ, আক্রমণমুখী ভাব ইত্যাদি পশুসুলভ ব্যাধি বৃদ্ধি করে। মানুষ আজ উগ্র প্রকৃতির হয়েছে, বিশ্বযুদ্ধ বাধাতে চাইছে, সর্বত্র উচ্ছৃঙ্খলতা চলছে। এর মূলেও আমিষ বস্তুর প্রতিক্রিয়া অনস্বীকার্য।
পশু-পাখি মাছ-ব্যাঙ ও কীট-পতঙ্গের রক্ত মাংস হাড়-এগুলি শাস্ত্রে অমেধ্য বা অপবিত্র বলা হয়েছে। সেই অমেধ্য দ্রব্য ভক্ষণ করা সভ্য মানুষের লক্ষণ নয়, তা পশু মানসিকতারই লক্ষণ।
শ্রীমনুসংহিতার নির্দেশ অনুসারে, যদি কেউ এই জন্মে মাছ মাংস খেতে চায়, তবে জন্মন্তর চক্রে যখন সে অনুরুপ একটি দেহ লাভ করবে, তখন অনুরুপভাবেই নিজের রক্ত মাংস হাড় হৃৎপিণ্ডটাকে অপরকে খাদ্যরুপে নিবেদন করতে বাদ্য হতে হবে। মাংস কথাটির অর্থ-মাম্ মানে আমাকে, স মানে সে। মাম্ স খাদতি ইতি মাংসঃ (মনুসংহিতা) অর্থাৎ, আমাকেও সে পরজন্মে এইভাবেই খাবে-তারই একটি প্রতিশ্রুতি।
জগতে প্রত্যেক জীব প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে চলে। কিন্তু মানুষকে ভগবান অনেক ম্বাধীনতা নিয়েছেন। ‘যথেচ্ছসি তথা কুরু’-তোমার ইচ্ছায় তুমি কর্ম কর। মনুষ্য জীবন হল কর্মক্ষেত্র। সে ইচ্ছা করলে দেবতা হত পারে-ইচ্ছা করলে শূকর হতে পারে। বহু তান্ত্রিক এমনকি বিষ্ঠাও ভক্ষণ করে।
রামায়ণ, মহাভারত ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থে দেখা যায় রাম লক্ষ্ণণ, কিংবা পাণ্ডবেরা-তাঁরা সবাই মহা বলশালী যোদ্ধা ছিলেন। বহু অসুরের সঙ্গে তাদের লড়াই করতে হয়েছে। কিন্তু তারা মাছ মাংস খেতেন না। ইতিহাসের কোনও মহীয়সী সতী সাধ্বী নারীদের কখনও আমিষ রান্না করতেও দেখা যায়নি, যা বর্তমানেই যত দেখা যাচ্ছে।মাছ- মাংস মানুষের ভক্ষ্যদ্রব্য নয়। তামসিক নিকৃষ্টস্তরের মানুষেরাই মাছ-মাংসকে খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করেছে।
শ্রীমদ্ভগবতে নির্দেশিত হয়েছে– যক্ষরক্ষাংসি ভূতানি পিশাচাঃ পিশিতাশনাঃ (৪/১৮/২১) অর্থাৎ যক্ষরাক্ষস ভুতপ্রেত এবং পিশাচেরাই আমিষ আহারে অভ্যস্ত।
অনেক বলে যে, ‘আমরা অন্যান্য পোকামাকড়, সাপব্যাঙ, পশূপাখি খাই না, কেবল মাছ খেলে দোষ কি ?’ কিন্তু মানবজাতির পিতা মহর্ষি মনু আমাদের মৎস্য ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন—
যো যস্য মাংসমশ্নাতি স তন্মাংসাদ উচ্যতে।
মৎস্যাদঃ সর্বমাংসাদস্তস্মান্মৎসান্ বিবর্জয়েৎ।। (মনুসংহিতা ৫/১৫)
অর্থাৎ যে যার মাংষ খায়, সেই ব্যক্তি তন্মাংসখাদক বলে কথিত। কিন্তু মাছ যাবতীয় প্রাণীর মাংষ খায়। সবরকমের মরা প্রাণীর পচা দেহ মলমূত্রাদি খেতে অভ্যস্ত। সুতরাং একটি মাছ খাওয়া যা সব রকমের মাংস খাওয়াও তাই। অতএব মাছ খাওয়া সর্বতোভাবে পরিত্যাজ্য।
মাছ মাংস ইত্যাদি অমেধ্য দ্রব্য পিশাচতুল্য তামসী লোকদের প্রিয় হতে পারে। অর্জুনকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাই বলছেন-অমেধ্যং ভোজন্য তামসপ্রিয়ম্ (গীতা ১৭/১০)-অমেধ্য ভোজন করা তামসিক লোকের প্রিয়।
শ্রীমদ্ভগবতে (১১/৫/১৪) বলা হয়েছে, “ধর্মতত্ত্বে অনভিজ্ঞ, দুর্বিনীত, সাধুত্ব-অভিমানী, দুর্জন অসাধু ব্যক্তিরাই নিঃশঙ্কচিত্তে পশুহিংসা করে, পরলোকে নিহত পশুরা তাদরে ভক্ষণ করে থাকে।” অতএব নরদেহ লাভ করে যারা বুদ্ধি বিপর্যয়ক্রমে মাংস খাচ্ছে, তাদের অনুরূপভাবে ঋৃণচক্র পরিশোধ করতেই হবে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বলেন, খাদ্যরসের মধ্যে কোলেস্টেরল নামে এক প্রকার পদার্থ এসে উপস্থিত হলে সেই পদার্থের ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় শরীরে ক্ষয়রোগ মৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে।রক্তদূষণ, হৃদরোগ, অস্থিক্ষয়, ক্যানসার, খোস পাঁচড়া, চর্মরোগ ইত্যাদি ব্যাধির কারণ সেই ‘কোলেস্টেরল’ । এই পদার্থটির উৎস হল মাছ মাংস। তাই প্রিয় রোগীদের বর্তমানে কোলেস্টেরণ-বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ মাছ মাংস খেতে নিষেধ করেন। ১৯৬১ সাথে, ‘জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিক্যাল এসোসিয়েসন’ ঘোষণা করে “ নব্বই থেকে সাতানব্বই শতাংশ হৃদরোগ নিরামিষ আহারের দ্বারা নিরাময় করা যেতে পারে।” ১৯৭৭ সালে ,ইন্টার সোসাইটি কমিশন ফর হার্ট ডিজিজ এর সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে, তামাক এবং মদের পরে মাংসই হল পশ্চিম ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং পথিবীর বহু ধনী দেশে অধিকাংশ অকাল মৃত্যুর কারণ।
অনেক সময় পত্রিকায় দেখা যায়, রুগ্ন মাছ খেয়ে বহু লোক মৃত্যু বরণ করছে। অবশ্য মৎস্য ব্যবসায়ীগণ ঐসব খবর আদৌ পছন্দ করেন না। দেখা যায়, মৎস্যভোজী বাঙালীর চেয়ে নিরামিষভোজী মাড়োয়ারীরা অনেক বেশি ভাল স্বাস্থ্যের অধিকারী।
শরীরত্ত্ববিদগণ মানুষের শরীরে অন্ত্র ও দাঁতের গঠন পরীক্ষা করে দেখেছেন,মানুষ আমিষভোজী শ্রেণীর জীব নয়। মানুষ নিরামিষ ভোজীর অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত মাংসাশী প্রাণীর দাঁতগুলি ছুঁচালো ও ধারালো এবং তাদরে থাকে শক্ত ও তীক্ষন নখ। যেমন বাঘ, সিংহ, কুকুর। সাধারণতঃ নিরামিষ ভোজীদরে দাঁত হয় চেপ্টা। যেমন গরু, ছাগল।
মাছ-মাংস রজ ও তমোগুনের সঞ্চারক অখাদ্য। তা মানুষের মনের উগ্রতা,বদ মেজাজ, আক্রমণমুখী ভাব ইত্যাদি পশুসুলভ ব্যাধি বৃদ্ধি করে। মানুষ আজ উগ্র প্রকৃতির হয়েছে, বিশ্বযুদ্ধ বাধাতে চাইছে, সর্বত্র উচ্ছৃঙ্খলতা চলছে। এর মূলেও আমিষ বস্তুর প্রতিক্রিয়া অনস্বীকার্য।
পশু-পাখি মাছ-ব্যাঙ ও কীট-পতঙ্গের রক্ত মাংস হাড়-এগুলি শাস্ত্রে অমেধ্য বা অপবিত্র বলা হয়েছে। সেই অমেধ্য দ্রব্য ভক্ষণ করা সভ্য মানুষের লক্ষণ নয়, তা পশু মানসিকতারই লক্ষণ।
শ্রীমনুসংহিতার নির্দেশ অনুসারে, যদি কেউ এই জন্মে মাছ মাংস খেতে চায়, তবে জন্মন্তর চক্রে যখন সে অনুরুপ একটি দেহ লাভ করবে, তখন অনুরুপভাবেই নিজের রক্ত মাংস হাড় হৃৎপিণ্ডটাকে অপরকে খাদ্যরুপে নিবেদন করতে বাদ্য হতে হবে। মাংস কথাটির অর্থ-মাম্ মানে আমাকে, স মানে সে। মাম্ স খাদতি ইতি মাংসঃ (মনুসংহিতা) অর্থাৎ, আমাকেও সে পরজন্মে এইভাবেই খাবে-তারই একটি প্রতিশ্রুতি।
জগতে প্রত্যেক জীব প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে চলে। কিন্তু মানুষকে ভগবান অনেক ম্বাধীনতা নিয়েছেন। ‘যথেচ্ছসি তথা কুরু’-তোমার ইচ্ছায় তুমি কর্ম কর। মনুষ্য জীবন হল কর্মক্ষেত্র। সে ইচ্ছা করলে দেবতা হত পারে-ইচ্ছা করলে শূকর হতে পারে। বহু তান্ত্রিক এমনকি বিষ্ঠাও ভক্ষণ করে।
রামায়ণ, মহাভারত ইত্যাদি ধর্মগ্রন্থে দেখা যায় রাম লক্ষ্ণণ, কিংবা পাণ্ডবেরা-তাঁরা সবাই মহা বলশালী যোদ্ধা ছিলেন। বহু অসুরের সঙ্গে তাদের লড়াই করতে হয়েছে। কিন্তু তারা মাছ মাংস খেতেন না। ইতিহাসের কোনও মহীয়সী সতী সাধ্বী নারীদের কখনও আমিষ রান্না করতেও দেখা যায়নি, যা বর্তমানেই যত দেখা যাচ্ছে।মাছ- মাংস মানুষের ভক্ষ্যদ্রব্য নয়। তামসিক নিকৃষ্টস্তরের মানুষেরাই মাছ-মাংসকে খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করেছে।
শ্রীমদ্ভগবতে নির্দেশিত হয়েছে– যক্ষরক্ষাংসি ভূতানি পিশাচাঃ পিশিতাশনাঃ (৪/১৮/২১) অর্থাৎ যক্ষরাক্ষস ভুতপ্রেত এবং পিশাচেরাই আমিষ আহারে অভ্যস্ত।
অনেক বলে যে, ‘আমরা অন্যান্য পোকামাকড়, সাপব্যাঙ, পশূপাখি খাই না, কেবল মাছ খেলে দোষ কি ?’ কিন্তু মানবজাতির পিতা মহর্ষি মনু আমাদের মৎস্য ভক্ষণ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন—
যো যস্য মাংসমশ্নাতি স তন্মাংসাদ উচ্যতে।
মৎস্যাদঃ সর্বমাংসাদস্তস্মান্মৎসান্ বিবর্জয়েৎ।। (মনুসংহিতা ৫/১৫)
অর্থাৎ যে যার মাংষ খায়, সেই ব্যক্তি তন্মাংসখাদক বলে কথিত। কিন্তু মাছ যাবতীয় প্রাণীর মাংষ খায়। সবরকমের মরা প্রাণীর পচা দেহ মলমূত্রাদি খেতে অভ্যস্ত। সুতরাং একটি মাছ খাওয়া যা সব রকমের মাংস খাওয়াও তাই। অতএব মাছ খাওয়া সর্বতোভাবে পরিত্যাজ্য।
মাছ মাংস ইত্যাদি অমেধ্য দ্রব্য পিশাচতুল্য তামসী লোকদের প্রিয় হতে পারে। অর্জুনকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাই বলছেন-অমেধ্যং ভোজন্য তামসপ্রিয়ম্ (গীতা ১৭/১০)-অমেধ্য ভোজন করা তামসিক লোকের প্রিয়।
শ্রীমদ্ভগবতে (১১/৫/১৪) বলা হয়েছে, “ধর্মতত্ত্বে অনভিজ্ঞ, দুর্বিনীত, সাধুত্ব-অভিমানী, দুর্জন অসাধু ব্যক্তিরাই নিঃশঙ্কচিত্তে পশুহিংসা করে, পরলোকে নিহত পশুরা তাদরে ভক্ষণ করে থাকে।” অতএব নরদেহ লাভ করে যারা বুদ্ধি বিপর্যয়ক্রমে মাংস খাচ্ছে, তাদের অনুরূপভাবে ঋৃণচক্র পরিশোধ করতেই হবে।
0 মন্তব্যসমূহ
Thanks for Comment
Emoji